কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আবু বক্কর (৫৭) নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার বিচার দাবীতে মানববন্ধন করেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
রোববার (২২জানুয়ারি) পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার মুজরাই মোরে ডুমরাকান্দা-জাফরাবাদ রাস্তায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় কৃষক আবু বক্কর হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবী জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, নিহতের ছেলে আয়ুর্বেদীক ডা. মো. বায়েজিদ মিয়া, স্থানীয় রামদী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আসাদ মিয়া, সালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য রুমান খাঁন, গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. বাদল মিয়া, পল্লী চিকিৎসক মো. কামাল হোসেন বকুল, বীর কাশিমনগর গ্রামের নাহিদুল হাসান ও ফিরুজ মিয়া (রাজা) প্রমূখ।
উল্লেখ্য, স্কুল ছাত্রীদের ইভটিজিংয়ের বিচার দেওয়ায় গত ১৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার রামদী ইউনিয়নের মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামে আব্দুস সোবহানের ছেলে মো. আবু বক্কর মিয়া ইভটিজারদের হাতে খুন হয়।
এঘটনায় নিহতের ছেলে আয়ুর্বেদীক ডাক্তার মো. বায়েজিদ মিয়া (৩০) বাদী হয়ে গত ২০ জানুয়ারী মো. বাবুল মিয়া, মো. রাশেদুল আলম রিসাদ, মো. পারভেজ মিয়া ও মো. আলম মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জনের নামে কুলিয়ারচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ১২। মামলা রুজু হওয়ার পর এ রিপোর্টে লিখা পর্যন্ত এখনো কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি বলে জানা যায়।
এব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা আবু বক্করের নিহতের ঘটনায় ৪ জনের নামে একটি মাললা রুজু হয়েছে নিশ্চিত করে বলেন, আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে একটি দূর্ঘটনায় আহত স্থানীয় বীর কাশিমনগর এফ.ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. হাসিনা বেগমকে মুজরাই মধ্যপাড়া গ্রামে একসাথে দেখতে যায় ওই বিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ও দুই ছাত্রী। এসয় রাস্তায় ছাত্রীদের অশ্লীল ভাষায় কথাবার্তা বলে ইভটিজিং করে ওই গ্রামের রবি মিয়ার ছেলে মো. বাবুল মিয়া ও মো. আলম মিয়ার ছেলে মো. রাশেদুল আলম রিসাদ সহ কয়েকজন। এঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিষয়টি তাদের মেডাম হাসিনা বেগমকে জানান। হাসিনা বেগম বিষয়টি আবু বক্করের স্ত্রী আনিছা বেগমকে জানান। আনিছা বেগম বিষয়টি নিয়ে রিসাদ এর পিতা আলমের নিকট বিচার দেন। আলম তার ছেলে রিসাদকে তার বাবা শ্বাসন করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে আলমের ছেলে রিসাদ, সালামের ছেলে পারভেজ ও রবি মিয়ার ছেলে বাবুল আরো কয়েকজন নিয়ে কৃষক আবু বক্করের বাড়িতে গিয়ে আনিছা বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে তাকে খুঁজতে থাকে। এসময় এদের গালাগালির শব্দ পেয়ে আনিছার স্বামী কৃষক আবু বক্কর বাড়িতে এসে আনিছাকে খুঁজার কারন জিজ্ঞেস করলে তারা ওই কৃষক আবু বক্করকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এসময় আবু বাক্কারের ভাতিজা স্বজীব বাঁধা দিতে গেলে তাকেও মারধোর করে হামলাকারীরা। পরে জ্ঞানহারা অবস্থায় আবু বক্করকে তার বাড়ির আঙ্গিনায় ফেলে চলে যায় তারা। পরে স্থানীয়রা আবু বক্করকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নিহতের হিতাকাঙ্ক্ষীরা উত্তেজিত হয়ে রিসাদ, বাবুল ও পারভেজদের বসত ঘরে ও জিনিস পত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।