নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় আশুজিয়া ইউপি’র হাসুয়ারী (নদীরপাড়) গ্রামের মৃত ধনালী ফকিরের ছেলে নিরীহ মো. ইসলাম উদ্দিন ফকিরের পরিবারের লোকজনদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্র লাঠি, লোহার রড ও রামদা হাতে নিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে একই গ্রামের আবু সিদ্দিক পরিবারের লোকজন। এরই প্রতিবাদে বীরগঞ্জ বাজারে ২নং আশুজিয়া ইউপি’র চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় লোকজন। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও প্রায় শতাধিক নারী, পুরুষ বিক্ষোভ মিছিলে অংশ গ্রহণ করে।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি গত ১২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় উপজেলার বীরগঞ্জ বাজারের আশুজিয়া ইউপি’র চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলীর ব্যবসার ধানের গদির সামনে মো. শাহজালাল ও সেনা সদস্য রওনক আহমেদ (ওরফে শাহেন শাহ) তাদের দুজনের নেতৃত্বে ঘটেছে বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, হাসুয়ারী (নদীরপাড়) গ্রামের প্রবাসী আবুল কালাম দীর্ঘদিন ধরে বিদেশ থাকেন। পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে তিন সন্তানের জনক স্ত্রী নার্গিস আক্তারের নামে টাকা পাঠায়। এদিকে নার্গিস আক্তার পরিবারের লোকজনের অগোচরে একই গ্রামের মো. ইব্রাহিমের ছেলে মো. শাহজালালের সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে ও প্রবাসী স্বামীর পাঠানো টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করে শাহজালালের নামে রেজিস্ট্রি করে দেয় প্রবাসী আবুল কালামের স্ত্রী নার্গিস আক্তার। এক পর্যায়ে বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পরিবারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে ১২ লাখ টাকা জমির মূল্য ধার্য করে নগদ ৪লাখ টাকা বায়না হিসেবে জমির মালিক মো. শাহজালালকে দেয়া হয় এবং বাকী ৮লাখ টাকা যেদিন রেজিস্ট্রি হবে সেদিন দেয়া হবে এই মর্মে মীমাংসা করা হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও জমি রেজিস্ট্রি করে দেয় না মো. শাহজালাল।
ঘটনার তারিখে ও সময়ে বৃহস্পতিবার ১২ জানুয়ারি বিকাল আনুমানিক ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের বীরগঞ্জ বাজারে আবুল কালামের ছেলে পিয়াস এবং ইসলাম উদ্দিনের ছেলে মো. রাসেল মিয়া জমির মালিক মো. শাহজালালকে জিঙ্গেস করে কবে জমি রেজিস্ট্রি করে দিবে বলার সাথে সাথেই আগে উৎপেতে থাকা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইব্রাহিমের ছেলে, আবু সিদ্দিক, শাহজালাল, আবুল মিয়া, শাহ আলম, আব্দুল আজিজ, আবুল মিয়ার ছেলে সেনা সদস্য রওনক আহমেদ (ওরফে শাহেন শাহ), মনি শাহ, এবং আব্দুল কাদিরের ছেলে মোস্তাকিন চারদিক থেকে পিয়াস ও রাসেলক ঘিরে ফেলে এবং তাদের হাতে থাকা লাঠি, রড ও রামদা দিয়ে পিয়াস ও রাসেলক জখম করে সন্ত্রাসী কায়দায়। তখন পরিস্থিতি খারাপ দেখে আস আশে পাশের লোকজন ফেরাতে আসলে শাহজালালের লোকজন তাদেরও আঘাত করার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে ২নং আশুজিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর আলী বলেন, জমি রেজিস্ট্রি করে দিবে বলে শাহজালালকে আমার হাতে ৪লাখ টাকা বায়না দিয়েছিলাম এবং বাকী ৮লাখ টাকা রেজিস্ট্রি করার সময় দেয়া হবে কিন্তু সে টালবাহানা শুরু করে, শাহজালাল জমি রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। শাহজালাল ও সেনা সদস্য রওনক আহমেদ (ওরফে শাহেন শাহ) তাদের নেতৃত্বেই এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে।
সেনা সদস্য রওনক আহমেদ সে আমার সামনে পিয়াস ও রাসেলক বেদরক মেরে জখম করেছে। আমি ফেরাতে গেলে সেনা সদস্য রওনক আহমেদ আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং এও বলে যে যেই ফেরাতে আসবে তাকেই এদের সাথে খুন করিয়া ফেলবে। সে আরো বলে আমি সেনাবাহিনীতে চাকরি করি এক দুইটাকে মেরে ফেললে আমার কিছুই হবে না। যখন পিয়াস ও রাসেলক গুরুতর জখম মেরে ফেলেতেছে তখন বাজারের সকল লোকজনের সহায়তায় উদ্ধার করে জরুরি উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।
ইউপি সদস্য মো. সোহেল মিয়া বলেন- গত ১২ জানুয়ারি বীরগঞ্জ বাজারে মো. শাহজালাল ও সেনা সদস্য রওনক আহমেদ (ওরফে শাহেন শাহ) এই দুজনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কায়দায় আমার সামনে তারা দুজন এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবী অবিলম্বে এই সন্ত্রাসী বাহিনীকে দমন করা না গেলে তারা পরিস্থিতি আরো খারাপ করে ফেলবে।
অভিযুক্ত মো. শাহজালাল জানান- আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।