এই মানুষটি নিয়ে লিখতে গেলে লেখা শেষ হবে না তারপরেও লিখলাম। বলছি একজন ব্যক্তির কথা পঞ্চগড়ে যার রক্তে মিশে আছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। সেই তরুণ বয়সে ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত রাজনীতিতে আছেন শক্তভাবে অবস্থানে। তৃনমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে গড়ে উঠা একজন মানুষ বারবার কারা-নির্যাতিত নেতা বলছি পঞ্চগড়ের মজাহারুল হক প্রধানের কথা । ১৯৬৫ সালে তেতুলিয়া পাইলট হাইস্কুলে
ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের পতাকাতলে এসে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন । সে সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সহজ ছিলোনা। তখনকার কেউ কি জানতো, সেই তরুণ মেধাবী ছাত্র মোজাহারুল হক প্রধান একদিন ছাত্রলীগের মত সংগঠনের দায়িত্বে হাল ধরবে। সময়টা তখন ‘৬৮ রংপুর কলেজ ছাত্রলীগ শাখার গুরুত্বপূর্ণ পদ “দপ্তর সম্পাদক” এর দ্বায়িত্ব এসে পরে তার কাঁধে। তখন তিনি ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র। তখন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নাম লেখান জনতার ভালোবাসায় স্থান করে নেওয়া আজকের পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: মোজাহারুল হক প্রধান,
সময়ের সাথে সাথে নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে শক্তিশালী করে পঞ্চগড় জেলার সবার মুখে পরিচিতি লাভ করেন- মোজাহারুল হক প্রধান।
শুধু ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগের রাজনীতি নয় সমাজের সাধারণ গরীব, দুঃখী মেহনতী মানুষের বিপদে আপদে ছুটেছেন সব সময়। জনগনের আস্থা, বিশ্বাস আর ভালোবসা অর্জন করে নিয়েছেন নিজের যোগ্যতায়। নিজ প্রচেষ্টায় রাতদিন পরিশ্রম করে তৃনমূল থেকে উঠে আসা তরুণ ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়েছেন স্নেহ ভালোবাসা আর সঠিক দিকনির্দেশনা! নিজ পরিবারকে সময় না দিয়ে জনগণের কল্যাণের জন্য বেশির ভাগ সময় রাজনীতিতে ব্যয় করেছেন। যখন থেকে জনগণের সেবা করাকে ইবাদত মনে করেছেন আর জনগণের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, তখন থেকে সবাই মোজাহারুল হক প্রধান এর মায়ায়, আচার-আচরনে মুগ্ধ হয়ে পড়েছেন। নেতার মত নয়, মোজাহারুল হক প্রধান বড় ভাইয়ের মত করে আগলে রেখেছেন সকল কর্মীকে। বড়দের সর্বদা করছেন সম্মান। সব শ্রেনী পেশার মানুষকে দেখেছেন এক নজরে, কৃষক শ্রমিক, দিনমজুর সবাইকে দিয়েছেন বুকে ঠাই। রাজপথে নিজ অবস্থান থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জনতার মোজাহারুল হক প্রধান। যখনি কারো বিপদ শুনেন ছুটে যান সবার আগে। ছাত্র জীবনে ঘটে জাওয়া কিছু ঘটনা। তখন ছিলো ছাত্রদের হাতে লিখা পোষ্টার- লিফলেটের সময়। এর মাঝে ১৯৬৯ এ বঙ্গবন্ধুর পলাশবাড়ী সফর। তিনি খুব কাছ থেকে দেখতে পান বঙ্গবন্ধুকে।পারাপারের সময় সুযোগ ও হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর স্নেহের ছোঁয়া পাবার।সেদিন বঙ্গবন্ধু সেই ছেলেটির কাঁধে হাত রেখেছিলেন।এ যেন তার স্মৃতিতে তার ছাত্র রাজনীতির এক স্বীকৃতিস্বরূপ,এক অনন্য অনুপ্রেরণা। ১৯৭১ সালে সেই অনুপ্রেরণাই পৌঁছে দেয় তাকে গ্রেটার রংপুর জেলা ছাত্রলীগের “সাংগঠনিক সম্পাদক” পর্যন্ত।
কিন্তু তখনকার সময়ে ছাত্ররাজনীতি ছিল কষ্টের।অকারণে জেল-জুলুম সহ সামাজিকভাবে হেয় করা ছিল এক নিয়মিত বিষয়। এর-ই সূত্র ধরে তাকে যেতে হয় দু’বার জেলে। শেষ করা হয় না আর ছাত্র জীবন। তখন তিনি কারমাইকেলের ছাত্র।
এ যেন বঙ্গবন্ধুর পথে তারই কর্মীর পদচিহ্ন অনুসরণ করা। এছাড়াও ভোররাতে পোস্টার লাগাতে গিয়ে পুলিশের কাছে তাড়া কিংবা কিছু সময় আটক রাখা,পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার নজির অসংখ্য তার জীবনে। ‘৭৪ এ আবার দেখা হয় বঙ্গবন্ধুর সাথে। এবার কিছুটা অন্য ভাবে। সভা কিংবা সমাবেশে নয়।তখন তিনি আহত NSFএর হামলায় পায়ের রগ কেটে ফেলে জীবন্ত মাটি চাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে । তার পায়ে আজও রয়েছে সে চিহ্ন।বঙ্গবন্ধু তাৎক্ষণিক পিজি হাসপাতালে(বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) তার সুচিকিৎসার ব্যাবস্থা করেন এবং সে সময়ে ৭০০শত টাকা হাতে ধরিয়ে দেন। তারপর বাঙালী জাতির জীবনে নেমে আসে কালো রাত।১৫ই আগষ্ট ১৯৭৫। ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে নেওয়ার ছিল এক অপরাধ।সে সময়ে গোপনে গোপনে তিনি চালিয়ে যান পঞ্চগড় জেলা ছাত্রলীগকে সংগঠিত করার অভিযান। তারই স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি দায়িত্ব পান পঞ্চগড় জেলা ছাত্রলীগের “সভাপতি” হিসেবে। সে সময় এক দোকানকে বন্ধ রেখে তার ভিতরে গোপনে আয়োজন করেন বঙ্গবন্ধুসহ ‘৭৫এ নিহত সকলের আত্মা মাগফিরাতের দোয়া।তারা ছিলেন ৬/৭ জন। কিন্তু বিপাক বাঁধে ইমামকে নিয়ে।কিছুতেই ইমাম বঙ্গবন্ধুর নাম নিবে না।কিন্তু কিছুটা চাপ প্রয়োগ করেই ইমামকে দিয়ে ইমাম সহ সেই ৬/৭ জন দোয়া শেষ করে। ‘৮০ এর শেষ পর্যন্ত তিনি স্ব-গৌরবে চালিয়ে যান তাঁর ছাত্র রাজনীতি। পরবর্তীতে আওয়ামী যুবলীগ কে সংগঠিত করে এবং ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ এর পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদে দেমনোনীত হন । এবং ২০০৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে মনোনীত হন এবং ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড় ১ আসনে ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার সাবেক তিনি দুই দফা বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সাবেক মোট ৫ বার জাতীয় সংসদের সদস্য তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয়, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হন। পরে নবম জাতীয় সংসদেও তিনি বগুড়া-৬ আসনে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি সরকারে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০-৮২ সময়কালে তিনি প্রথমে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১-৯৬ সময়কালে তিনি ভূমি, শিক্ষা এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত স্বল্পকালীন বিএনপি সরকারে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেই ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারকে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫৪ হাজার ভোটে পঞ্চগড়-১ আসনে মহাজোটের প্রার্থী নৌকা মার্কার প্রর্তীক নিয়ে মজাহারুল হক প্রধানের কাছে পরাজিত হন তিনি।
এবং ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের শরিক দলকে এই আসনটি শেখ হাসিনার নির্দেশে ছেড়ে দেন। এরপরে ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে মনোনীত করেন । আবার ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এর ছেলে মো: নওশাদ জমির কে ৪৪ হাজার ভোটে পরাজিত করে, দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন দিনশেষে সত্যের জয় আবার হবেই হবে….আবার রাজপথ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধুর, স্লোগানে স্লোগানে পঞ্চগড় জেলা রাজপথ মুখরিত করবেন। এবং পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে আবারও পঞ্চগড় বাসি দেখবে সাবেক ছাত্রনেতা মোজাহারুল হক প্রধানকে । যোগ্য ও সঠিক নেতার মূল্যায়ন হোক একটাই দাবী। গোটা জেলার বাসীর হৃদয়ে ভালোবাসার স্থান করে নিয়েছেন সৎ সাহসী সাবেক ছাত্রনেতা মোজাহারুল হক প্রধান। আর এটাই একজন রাজনৈতিক নেতার জন্য অনেক বড় পাওয়া। ভালোবাসা রইলো সাবেক ছাত্রনেতা, বতর্মান জেলা আওয়ামী লীগের, সিনিয়র সহ সভাপতি ও পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য, জনগণের আস্থাভাজন ব্যাক্তি আলহাজ্ব মো: মজাহারুল হক প্রধান।