চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে চলছে একের পর এক নাটকীয়তা। দফায় দফায় নিয়োগ বোর্ডের তারিখ দিয়েও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত উপাচার্যের এলাকার এক হেফাজতে ইসলামকর্মীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতেই এতসব নাটকীয়তা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিভাগের একাধিক শিক্ষক।
বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে একজন অস্থায়ী ও একজন স্থায়ী পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি। এতে আবেদন করেন ৯৬ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে একজন কক্সবাজার জেলার মিসবাহ উদ্দিন। যিনি হেফাজতে ইসলামের চিহ্নিত কট্টর কর্মী। পড়াশোনা করেছেন হেফাজত নিয়ন্ত্রণাধীন একাধিক কওমী মাদরাসায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস না করে তিনি ব্যস্ত থাকতেন হেফাজতের বিভিন্ন কর্মসূচিতে। এতসব কিছু সত্ত্বেও শুধুমাত্র উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ ও এলাকার হওয়ার কারনে তাকে নিয়োগ দিতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রশাসন।
বিভাগ সূত্রে আরও জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি বিভাগে জামায়াত-হেফাজতে ইসলামের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। এই দুই বিভাগে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে জামায়াতের সিন্ডিকেট সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এই সিন্ডিকেট এতটাই শক্তিশালী যে প্রশাসনও অনেকক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধাচারণ করতে পারে না। তবে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ ও হেফাজতকর্মী হওয়ায় দুই পক্ষই উঠেপড়ে লেগেছে তাকে নিয়োগ দিতে।
এদিকে আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে হেফাজতকর্মীকে নিয়োগ দিতে উপাচার্যসহ প্রশাসনের উঠেপড়ে লাগাকে অশনি সংকেত বলছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামীপন্থী শিক্ষক বলেন, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসনের অবস্থান আগে থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ। আর্থিক লেনদেনের বিষয়ের পর এবার হেফাজত প্রীতির বিষয়টিও সামনে আসলো৷ যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে এটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হবে।