সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার নিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী, বৃক্ষরোপণ, এ ব্লকের ৭ম তলায় রোজী জামাল মহিলা হোস্টেলের ছাদ পুননির্মাণ ও সংস্কারোত্তর উদ্বোধন, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ও প্রতিকৃতিতে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ও সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বিজয়ের ৫২ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, রোগীদের জন্য উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচী পালন ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস ২০২২ উদযাপিত হয়েছে।
কর্মসূচীর মধ্যে ছিল ১৬-ই ডিসেম্বর ২০২২ইং তারিখ, শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন উড্ডয়ন, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বি ব্লকের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, পরবর্তীতে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল ৯টায় বি ব্লকে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, রক্তদাতাদের বিনামূল্যে হেপাটাইটিস বি, সি, ম্যালেরিয়া, এইচআইভি, সিফিলিস রোগের স্ক্রিনিং টেস্ট করাসহ স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর মহতী আয়োজন, মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের টিএসসিতে আম, জামরুল, তেজপাতা, জলপাইসহ ফলজ ও ভেষজ চাড়া রোপণের মাধ্যমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর উদ্বোধন, সকাল সাড়ে ১০টায় এ ব্লকের ৭ম তলায় রোজী জামাল মহিলা হোস্টেলের ছাদ পুননির্মাণ ও সংস্কারোত্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন। মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ কর্তৃক রোজী জামাল মহিলা হোস্টেলের উদ্বোধনের পর সেখানে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ডক্টরস হল জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আইয়ুব আলী। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ-এর নেতৃত্বে সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে বি ব্লকের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ডীনবৃন্দ, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, অফিসপ্রধানগণ, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অপর্ণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। এর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে মাননীয় উপাচার্য মহোদয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বি ব্লকে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচীর শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করে বলেন, সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবশ্যই উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর কারণেই স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। যেকারণেই আজ আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বড় বড় কর্মকর্তা হতে পারছি। দেশ স্বাধীন না হলে আজও আমাদেরকে পাকিস্তানের গোলামী করতে হতো। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ আমরা কোনোদিন শোধ করতে পারবো না। তবে আমরা যদি নিজ নিজ দায়িত্ব কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করি, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) এমনভাবে গড়ে তোলা হোক যাতে করে দেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে না হয়। বঙ্গবন্ধুর সেই লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ৬০ বছরের নিচে যেকোনো সুস্থ মানুষ বছরে ৩ বার রক্ত দিতে পারেন। এতে করে অনেক মানুষের জীবন বেঁচে যাবে। রক্তদানের মাধ্যমে পরকালেরও পুণ্য অর্জন করা সম্ভব।
তাছাড়া রক্তদানের সময়ে কয়েকটি রোগ, ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য রক্তদাতার বেশ কয়েকটি পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হয়। এর ফলে ঐসকল রোগ রক্তদাতার রয়েছে কিনা তা জানা সম্ভব হয়। আমি দেশবাসীকে বছরে কমপক্ষে ১ বার রক্তদান করে মানুষের জীবন বাঁচানোর অনুরোধ করছি। মাননীয় উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে বর্তমান ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের শুভ উদ্বোধন করেছিলেন। তিনি রক্ত নিয়ে গবেষণার নির্দেশ দিয়েছিলেন। রক্তসহ চিকিৎসাসেবা ও স্বাস্থ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে।
জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই আয়োজনের নানা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, সার্জারি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বনিক, শিশু অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া বেগম, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার, হল প্রভোস্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এস এম মোস্তফা জামান, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ আসাদুল ইসলাম প্রমুখসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।