আজ বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যু দিবস। বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত ও সাহিত্যিক রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর, তিনি মারাও যান ১৯৩২ সালের একই তারিখে। অর্থাৎ ৫২ বছরের ব্যবধানে একই দিনে জন্ম ও মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
রংপুর পায়রাবন্দ গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁকে পরিবারে ‘রকু’ বলে সকলেই ডাকতেন। তাঁর যখন আঠারো বছর বয়োস, তখন মেয়েদের অনালোকিত জীবনে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। সেটা ছিল সেসময়ে অনেক বেশি বয়স! তাঁর বিয়ে হয়েছিল বিহারের ভাগলপুর নিবাসী সাখাওয়াত হোসেনের সাথে৷ বিপত্নীক, উর্দুভাষী, চল্লিশ বছরের মানুষটি ছিলেন রংপুরের পরিবারটি থেকে অনেক আলাদা, কুসংষ্কারমুক্ত-উদার-শিক্ষানুরাগী এবং ধীর-গম্ভীর৷ রোকেয়ার বিদ্যানুশীলন আর প্রতিভা বিকাশের উপযোগী পরিবেশ তৈরি আর আনুসঙ্গিক সমস্ত সহযোগিতা তিনি করেছিলেন – আমৃত্যু! সরোজিনী নাইডু সম্পাদিত “indian ladies magazine”পত্রিকায় রোকেয়ার একমাত্র উপন্যাস ‘পদ্মরাগ’ সাখাওয়াতের উৎসাহেই প্রকাশিত হয়৷ সাহিত্য জীবনের এই সাফল্যের মূহুর্তে স্বামীর চোখ নষ্ট হয়ে যায়৷ বিহার থেকে কোলকাতা দীর্ঘ সময় স্বামীকে সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টায় সাহিত্য রচনায় মন দিতে পারেননি তিনি!তারপর, তের বছরের যৌথ জীবনের সমাপ্তিতে রোকেয়া তখন একা- বড় একা! দুটি কন্যা সন্তান এসেছিল, কিন্তু বাঁচেনি৷ তবু, ঊনত্রিশ বছরের রোকেয়ার জীবনে নতুন যাত্রা শুরু হল- ভয়হীন অন্তরে, অচেনা জগতে৷ সেখানে নিজের আসন জায়গা করে নিয়েছিল বাঙালি পরিবারে।
অসংখ্য লেখক আর অজস্র বই জোয়ারে পুরুষ লেখকদের ভিড়ে চোখ টানে যাঁর ছবি,তিনি “বেগম রোকেয়া”৷ মেয়েদের তিনি অনুপ্রেরণা৷ বাংলার পশ্চিমে “ভগিনী নিবেদিতা”,পূর্বে বেগম রোকেয়া৷ ভাগাভাগির সীমারেখাকে ছাড়িয়ে,যাঁরা শুধু আলো দেখাননি, নিজেরাই আজও হয়ে আছেন অন্তহীন পথের — আলোক শিখা!
রোকেয়ার জীবন ও আদর্শকে সম্মান দিয়ে বাংলাদেশে ৯ই ডিসেম্বর তারিখটি “রোকেয়া দিবস” হিসাবে পালিত হয়৷ সমাজের বিশিষ্ট নারীদের অনন্য অর্জনের জন্য আছে “বেগম রোকেয়া পদক”৷ রংপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় “বেগম রোকেয়া” ‘র নামানুসারে স্থাপিত হয়।লং