যথাযোগ্য মর্যাদায় বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পঞ্চগড় মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় পাক হানাদার বাহিনী থেকে মুক্ত হয়।
এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে, র্যালি আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরনে মুনাজাত , বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন সহ নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়েছে । জানা গেছে ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিকামী জনতা কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে পঞ্চগড়কে পাক হানাদার মুক্ত করেছিলেন। মুক্তিকামি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই দিনটি আনন্দের। ১লা নভেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় মিত্র বাহিনী যৌথভাবে পাকবাহিনীর ডিফেন্সের উপর হামলা চালায়।
ফলে প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা মুক্ত হতে থাকে। মরন কামড় হিসেবে মুক্তি ও মিত্র বাহিনী পর্যায়ক্রমে পাকবাহিনীর উপর প্রচন্ড আক্রমণ চালিয়ে ২০শে নভেম্বর অমরখানা, ২৫শে নভেম্বর জগদলহাট, ২৬শে নভেম্বর শিংপাড়া, ২৭শে নভেম্বর পূর্ব তালমাসহ একইদিনে আটোয়ারী, মির্জাপুর, ধামোর, শক্রমুক্ত করে রাতেই তারা পঞ্চগড় সিও অফিস ও ঘাটিয়ারপাড়া এলাকায় ফ্রন্টলাইন গড়ে তোলেন।
২৮শে নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চারদিক থেকে পাকবাহিনীর উপর ঝড়ো আক্রমণ করে। এ আক্রমণে পঞ্চগড় শহরের পূর্বদিকে ডিফেন্স নিয়ে থাকা পাকবাহিনী টিকতে না পেরে টুনিরহাট দেবীগঞ্জ ভায়া ডোমার হয়ে কাঁচা রাস্তা ধরে সৈয়দপুর অভিমুখে পিছু হটতে থাকে। ওইদিন রাতে মুক্তি, মিত্র, ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনীর সম্মিলিত সাড়াশি আক্রমণে পরাজিত হয়ে পাক বাহিনী পঞ্চগড়ের মাটি ছেড়ে চলে গেলে ২৯শে নভেম্বর ভোরে পঞ্চগড় হানাদার মুক্ত হয়।
সেই থেকে ২৯ নভেম্বর দিনটিকে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে র্যালি আলোচনা সভা শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা চত্তরে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করেন। এ সময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এবং প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন শেষে শহীদদের স্মরনে মুনাজাত করা হয়।
পরে সেখান থেকেই র্যালি নিয়ে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের সামনে বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পন করে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী সহ পুলিশ প্রশাসন । পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নেন।