ঋণের বোঝা ডাকাতের শংকা মাথায় নিয়ে জেলেদের সমুদ্রযাত্রা

মা ইলিশ রক্ষার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সুন্দরবনের দুবলার চরের শুঁটকি তৈরির মৌসুম। দুবলার শুঁটকি পল্লীতে ফের শুরু হতে যাচ্ছে কর্মব্যস্ততা। বন বিভাগের পাশ-পারমিট নিয়ে জীবনের ঝুঁকি ডাকাতের শংকা ও ঋণের বোঝা মাথায় রেখে মৎস্য আহরণে সমুদ্রে যাত্রা করছে জেলেরা। আগামী পাঁচ মাস দুবলার চর সরগরম হয়ে উঠবে জেলেদের উপস্হিতিতে।
প্রতি বছরের ন্যায় নৌবাহিনী,কোষ্টগার্ড,র‌্যাব সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের সার্বিক নিরাপত্তায় থাকবে। বন বিভাগের নির্দেশনা সুন্দরবনের কোনো গাছ বা লতাপাতা শুঁটকি পল্লীতে কোনো কাজে ব্যবহার সম্পূর্ন নিষিদ্ধ।এবছর শুঁটকী পল্লী থেকে সাত কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।

দেশের বড় অংকের একটা রাজস্ব আসে সুন্দরবনের দুবলার শুঁটকি পল্লী থেকে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও জেলেরা সমুদ্রে মৎস্য আহরণকে ঘিরে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে । ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছুটছে উপকূলের জেলে-মহাজনেরা। ইতোমধ্যে সাগরে যেতে যে যার মত প্রস্তুত করেছেন জাল, দড়ি, নৌকা-ট্রলার। কেউ কেউ গড়েছেন নতুন ট্রলার, আবার কেউ পুরাতন নৌকা মেরামত করে নিয়েছেন। প্রস্তুতি অনুযায়ী অনেকেই আগেভাগে রওনা দিচ্ছেন।দুবলার চরের ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি পল্লীতে। অনেকেই আবার সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ইতোমধ্যে চলে এসেছে মোংলা পশুর নদীর পাড়ে। আগামী ৫ মাস তারা শুঁটকী পল্লীতে থেকে তৈরি করবেন নানান জাতের মাছের শুঁটকি।শুধুমাত্র সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে ও নানা প্রতিকূলতায় ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেনি জেলে পরিবারগুলো। বরং দিন দিন তাদের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। ক্রমবর্ধমান ক্ষতির মুখে ইতোমধ্যে পূঁজি ও জাল-নৌকা হারিয়ে পেশা হারিয়েছেন অনেকে।
সরকারী তেমন কোনো সহযোগীতা না পেয়ে প্রতিবারের ন্যায় স্বর্ন বন্দকী রেখে এবারও মহাজন ও এনজিওর চড়া সুদের বোঝা মাথায় নিয়ে শুরু হয়েছে তাদের সমুদ্র যাত্রা।পাশাপাশি তাদের নতুন করে শংকায় ফেলেছে সাগরে নতুন করে জল ও বনদস্যুদের আনাগোনার খবর। তারা এ বিষয়ে বর্তমান সরকার ও আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারী চান।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম বলেন, বনবিভাগের কাছ থেকে পাশ (অনুমতিপত্র) নিয়ে নিজ নিজ এলাকা থেকে রওনা হয়ে জেলেদেরকে সরাসরি যেতে হবে দুবলার চরে। চরে ঘর বাড়ি বা দোকান পাট তৈরী করার জন্য কোন সুন্দরবনের কোন গাছ কাঠতে পারবে না। গত শুঁটকির মৌসুমে দুবলার চর থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল সাড়ে ৬ কোটির মত। এবারও তাদের আশা আছে সাড়ে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকার মত রাজস্ব আদায়ের।

প্রতি বছরের ন্যায় নৌবাহিনী,কোষ্টগার্ড,র‌্যাব সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা জেলেদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকল জেলেদের।।#

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home11/onzcfyam/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464