জমিজমা ও মামলা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে আহত তাজুল ইসলাম (৬০) নামের একব্যক্তি মারা যাওয়ার ঘটনায় অপরপক্ষের বসতবাড়ি ও দোকানঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাটি উপজেলার রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নের সহিলাটি গ্রামে ঘটে। নিহত হওয়ার সংবাদ এলাকায় প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথে নিহতের লোকজন এ ভাংচুর ও লুটপাট করে বলে জানান মামলার আসামি শেখ আব্দুল্লাহ।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী সরজমিনে গেলে ভাংচুরের চিত্রটি চোখের সামনেই দেখা যায়। ঘটনাস্থলের আশেপাশে তেমন কাউকে না পাওয়ায় নিহত তাজুল ইসলামের মেয়ে ও হত্যা মামলার বাদী হেনা আক্তার বলেন, আসামীরা আমার বাবাকে গুরুতর আহত করে ফেলে যাওয়ার পরে বাবাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আমরা সবাই চলে যাই তাহলে আমরা কিভাবে ভাংচুর লুটপাট করবো? তবে, বসতবাড়ি-দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট কারা করেছে আমরা বলতে পারব না, এটা ঠিক হয়নি।
আসামী শেখ আব্দুল্লাহ মুঠোফোনে জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অর্থাৎ ঘটনার দিনও আমি ঢাকায়। মামলার মূল আসামি লেহাজ উদ্দিন আমার ফুফাতো ভাই এবং ঘটনাটি আমার বসতবাড়ির পাশেই তাই আমাকে আসামি করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের নেতৃত্বে আমিনুল ইসলাম ছোটন, সেলিম মিয়া, মানিক মিয়া, বাবুল মিয়া, মান্নান মিয়া গংরা আমার হাফবিল্ডিং বসতঘর, আমার স্ত্রীর একটি শফিং সেন্টারের হাফবিল্ডিং ঘর ও আমার ছোট ভাইয়ের বসতঘরসহ ৬টি ঘর ভাংচুর-লুটপাট করে যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধকোটি।
কেন্দুয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান সংবাদকর্মীদের জানান, নিহতের মেয়ে হেনা আক্তার বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে গত ২১ সেপ্টেম্বর ১২ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। আসামীদের বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাংচুর-লুটপাটের ঘটনায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলা এজাহার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সহিলাটি গ্রামের তাজুল ইসলামের সাথে পার্শ্ববর্তী সান্দিকোনা ইউনিয়নের চেংজানা গ্রামের লেহাজ উদ্দিনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও মামলা চলে আসছিল। এরই জেরে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে তাজুল ইসলাম কাজ করার সময় লেহাজ উদ্দিনসহ তার লোকজন তাজুল ইসলামকে মারধর করে। মারধরে তাজুল ইসলাম গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হলে প্রথমে তাকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শেষ পর্যায়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে মারা যান তিনি।