বাগেরহাটে প্রায় ১০ হাজার পরিবারকে বিভিন্ন সহযোগিতা গ্রহণের উদ্যোগ 

উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে  দরিদ্র ও প্রান্তিক  ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১০ হাজার
পরিবারের  মাঝে বিভিন্ন সহযোগিতার জন্য  জাতিসংঘের  তহবিল থেকে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

এর  মধ্যে বাগেরহাট জেলার মোংলা ও মোড়েলগঞ্জে  প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহিষ্ণু অবকাঠামোগত সুবিধা, জলবায়ু সহনশীল  সবজি উৎপাদন,বসতবাড়ি উঁচু করে নির্মাণ,দুর্যোগ  থেকে বাঁচতে বন সম্পদ রোপন,ভেড়া ও ছাগল বিতরণ,কাকড়া মোটাতাজা বা হ্যাচারি নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এসব সুবিধার আওতায় মোংলায় ৮৮৮৬ ও মোড়েলগঞ্জের ৩৫৪৯ জনকে মনোনীত করা হয়েছে। স্থানীয় দুইটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে এই প্রকল্প আগামী পাঁচ বছর ধরে বাস্তবায়ন করা হবে।বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অবহিতকরণ  সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

এ সময় অংশগ্রহণকারীর মধ্যে বহর বুনিয়া  ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ফারুক হোসেন শিকদার জানান,উপজেলার সবচেয়ে অবহেলিত জনপদ বহরবুনিয়া ইউনিয়ন। উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব সময় সমস্যা লেগেই থাকে। জেলার একমাত্র এ ইউনিয়নে একটি পিচ ঢালা রাস্তা এখনো গড়ে উঠেনি।

অসুস্থ এবং গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে নেওয়ার সময় কোন যানবাহন বা অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা যায় না। নদীপথ একমাত্রই ভরসা যেটা অনেক সময়ের ব্যাপার। রোগীদের নদীপথে হাসপাতালে নেওয়ার পথে অনেকে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জলোচ্ছ্বাসই নয়  বিশেষ করে করে বর্ষাকালে এই এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। হাটবাজারগুলো বৃষ্টিতে ডুবে যায়। মানুষ এতটাই অসহায় পড়ে যা আসলে দেখার কেউ থাকেনা। আধুনিক জীবন যাপন কালে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ এই ধরনের জীবন সংগ্রামের  মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকতে হয় হাজারো মানুষের।

শুধু তাই নয়, নদীমাতৃক এলাকা হওয়ায়  নদী ভাঙ্গন লেগেই থাকে ফলে অনেক পরিবারের ঘরবাড়ি  নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তলিয়ে যায় পানিতে। গবাদি পশু পালন ও ফসলাদি  উৎপাদনে প্রতিবছর বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তারা।এ সহযোগিতা অনেকের জন্য আলোর মুখ দেখলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি কম।বক্তারা এসব সুবিধাভোগীদের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান।

এদিকে একদম সুন্দরবনের কোল ঘেষে  হাজার হাজার পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস  করে থাকে।কেউ ভূমিহীন কেউবা জীবিকার তাগিদে সুন্দরবন ও নদী নির্ভর হওয়ার কারণে নদীর কুলেই তাদের বসবাস। বর্ষাকাল বা জলোচ্ছ্বাসে নয়  জোয়ারের পানিতেই ঘরবাড়ি  তলিয়ে যায় প্রতিনিয়ত। মংলা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বেড়িবাধ না থাকায়  জীবন মৃত্যুর মধ্য থেকেই তারা বাঁচার স্বপ্ন দেখে।

স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পশুর নদীর তীরে রিং বেড়িবাধ গড়ে তুললেও তা প্রাকৃতিক দুর্যোগে বারবার  ভেঙে যায়। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বহুবার জানানোর পর প্রতিশ্রুতি দিলেও অদ্যবধি তা বাস্তবায়ন হয়নি । এসব এলাকা পরিদর্শন করে তাদের পাশে দাঁড়ানো আহ্বান জানান ভুক্তভোগীরা । দুর্যোগ সহনশীল প্রকল্প গ্রহণ অবহিত করণ সভায়

পরিবেশ অধিদপ্তরে সাবেক পরিচালক ডক্টর ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক খালিদ হোসেন।এনজিও কর্মকর্তা কাজী রাজিব ইকবাল,উন্নয়ন কর্মী কাজী তোবারক হোসেন, জেলা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপকার ভোগী প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles