কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের ছোট ছয়সূতী খালিসা গ্রামে মাদকসেবি, জুয়ারি ও বখাটেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ ও আতংকে দিনাতিপাত করছে সনাতন ধর্মাবলম্বীর দুই শতাধিক নারী। দেখার যেন কেউ নেই এমন অভিযোগ করেন ওই গ্রামের ২০-২৫ জন নারী। এদের মধ্যে অল্প বয়সের কিশোরী ও ছাত্রী রয়েছে।
তারা অভিযোগ করে বলেন, তাদের পাড়ায় দিনের বেলায় প্রকাশ্যে কিছু জুয়ারি, মাদকসেবী ও বখাটে প্রতিদিনই বিভিন্ন বাড়িতে এসে জুয়া খেলাসহ মাদক সেবন করে মেয়ে ও মহিলাদের ইভটিজিং করে বেড়ায়। শুধু তাই নয় তারা বিভিন্ন সময় তাদের পাড়ায় একাধিক মেয়ে এনে বাড়ির মহিলাদের ঘর থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্য এবং ঘরে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন ও পানির টিউবওয়েল চুরি করে নিয়ে যায়। একাধিক ব্যক্তিকে মারধোর করে রক্তাক্ত জখমও করেছে বলে জানান তারা।
বখাটের কাজে বাঁধা নিষেধ দিলে খুন করার হুমকিও দেয় তারা। একাধিক মেয়ে বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ বখাটেরা তাদের বিভিন্ন কুইঙ্গিত ও কুপ্রস্তাব দেওয়ায় তাদের উৎপাতে বসত ঘর ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে থাকতে হয় তাদের। বখাটেরা চলে যাওয়ার পর তারা বাড়ি আসে। স্কুল কলেজে যাওয়ার পথেও ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। মারাত্মক অস্ত্রাধী নিয়ে আসায় বখাটেদের ভয়ে তারা কিছুই বলার সাহস পায়না। অবশেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের দুঃখ কষ্টের কথা তুলে ধরলেও মৃত্যু ও ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে বখাটেদের নাম ঠিকানা বলার সাহস পাননি। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দাবী করে বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এসব ঘটনা নিয়ে ২৭জুন বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একাধিক ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হলে অনেকের নজরে আসে।
এ বিষয়ে জানতে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সারোয়ার জাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এঘটনা জানতে পেরে বিকালে পুলিশ ফোর্স নিয়ে খালিসা গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে কাউকে পাওয়া যায়নি। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে নিয়ে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বখাটেদের নাম ঠিকানা জানতে চাইলে তারা কেউ কোন বখাটের নাম বলতে পারেনি। তার পরও আমরা চেষ্টা করছি বখাটেদের নাম ঠিকানা সনাক্ত করে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য। সকলের নিকট থানার ওসি, বিট অফিসারের মোবাইল নাম্বার সহ ৯৯৯ নাম্বার দিয়ে এসেছি। সমস্যা হলে কল করার জন্য। ওই গ্রাম পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। এছাড়া ওইদিন বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভৈরব সার্কেলের অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন খান।