ফেনী প্রতিনিধি ।।
পবিত্র ঈদুল আযহার কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে পূর্বঘোষিত ৫ ঘন্টা আগেই বর্জ্য অপসারণে সফল হয়েছে ফেনী পৌরসভা।
সোমবার (১৭ জুন) দুপুর ১টা কাজ শুরু বিকাল ৬টা পূর্বেই শেষ করেছে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ডাক্তার পাড়া, পশ্চিম ডাক্তার পাড়া, পাঠান বাড়ি রোড শহরের সবচেয়ে জনবসতিপূর্ণ এই ওয়ার্ডে বেশি পশু জবাই হয়। তাই নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কাজ শেষ করতে দেখা যায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের। এছাড়া ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রামপুর পাটোয়ারী বাড়ী সড়ক, চৌধুরী বাড়ী সড়ক, সওদাগর বাড়ী সড়ক, মির্জা বাড়ী সড়ক, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ সেলিনা পারভিন সড়ক, নাজির রোড ও শান্তিধারা সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পরিচ্ছন্নকর্মীদের কাজ করতে। তাদের লক্ষ্য মেয়রের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কাজ সমাপ্ত করা।
ফেনী পৌরসভার মেডিকেল অফিসার কৃষ্ণপদ সাহা জানান, ফেনী পৌসভার ১৮টি ওয়ার্ডে পশু জবাইয়ের জন্য ১০৯টি স্থান নির্ধারণ করা হয়ে ছিলো। সেই নির্ধারিত স্থান গুলোতে পশু জবাই করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাসা-বাড়ির সামনে রাস্তায় পশু জবাই হয়েছে। সেই সব জবাইকৃত স্থান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করতে পরিচ্ছন্নকর্মীরা ট্রলি, রিক্সা ভ্যান ও ময়লা বহনকারী ট্রাকে করে নির্দিষ্ট ডাস্টবিন ও নির্ধারিত স্থানে ডাম্পিং করে। পরে বর্জ্য গুলো ট্রাকে করে দেওয়ানগঞ্জে ডাম্পিং করা হয়। পাশাপাশি যে সব স্থানে কোরবানি করা হয়েছে, সেই সব স্থান পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করণ ও ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দূষণমূক্ত করা হয়েছে।
বর্জ্য অপসারণে বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ফেনী পৌরসভার থেকে দেয়া ব্যাগ (বস্তা)। কোরবানির পর বর্জ্য রেখে দেওয়ায় সহজে পরিস্কার করা দ্রুত সম্ভব হয়েছে বলে জানান পরিচ্ছন্নতাকর্মী রুহুল আমিন।
১০ নম্বর ওয়ার্ডের সুপারভাইজার নুর করিম জানান, মেয়র স্যারের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আমরা পুরো শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ করছি। মেয়র স্যার আমাদের উপর ভরসা রেখেছে আমরা সন্ধ্যার আগে সেটি রেখেছি।
১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, কোরবানী হয়েছে সেটি বোঝা অসম্ভব। কোথাও কোন ধরনের ময়লা আবর্জনা নেই। পুরো পাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং দুর্গন্ধমুক্ত রয়েছে। ধন্যবাদ জানান মেয়রকে।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নূরনবী মান্না বলেন, বর্জ্য বস্তায় ঢুকিয়ে রাস্তায় রাখার সাথে সাথে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা পিকআপ গাড়িতে করে নিয়ে গেছে এবং জবাইকৃত স্থানে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিয়েছে। এত দ্রুত সময়ে আমাদের পাড়ার বর্জ্য অপসারণ করা হবে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। প্রশংসার দাবি রাখে ফেনী পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
বর্জ্য অপসারণ নিয়ে পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, আমি পৌরবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ৫ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করব। পৌরবাসীর সহযোগিতায় ৫ ঘণ্টা আগে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছি।
মেয়র আরো বলেন, প্রবাসী অধ্যুষিত এই শহরের ১৮ ওয়ার্ডে প্রায় ৩০ হাজার গরু জবাই করা হয়েছে। এসব গরু বর্জ্য নির্দিষ্ট সময়ে অপসারণ করতে পেরেছে পৌরসভার পরিছন্নতাকর্মীরা। তারা নিরলস পরিশ্রম করে আমার দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে। পৌর শহরকে পরিষ্কার ও দুর্গন্ধমুক্ত করতে সম্ভব হয়েছে। সেজন্য আমি তাদের সবাইকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বর্জ্য অপসারণ ব্যাগ ব্যবহার করায় পৌরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে পৌর মেয়র বলেন, আপনাদের এই সহযোগিতা সামনের দিনগুলোতে অব্যাহত থাকলে ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর স্বপ্ন আধুনিক ও স্মার্ট সিটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
এছাড়া গত কয়েকদিন বর্জ্য অপসারণের সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিকদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।