মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পশু কুরবানী দিতে চান্দিনার বিভিন্ন হাটে কুরবানী পশু ক্রয় বিক্রয় করতে দেখা গেলেও দোল্লাই নবাবপুর বাজারের মত এতটা জমজমাট দেখা যায়নি।
শুক্রবার (১৪ জুন) উক্ত বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গরু-ছাগলের এ পশুর হাটটিতে উপচে পড়া ভিড়। প্রচন্ড রৌদ্রে সকাল থেকেই দূর-দূরন্ত থেকে গরু-ছাগল নিয়ে বিক্রেতারা হাটে আসতে শুরু করে। দুপুর থেকেই বৃহৎ এ হাটটি ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণা ও বেচাকেনাতে মুখরিত হয়ে ওঠে। ইতিপূর্বে এ হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে দর-কষাকষির চিত্র বেশি দেখা গেলেও শেষ হাটে তা দেখা যায়নি।
ক্রেতারা দেখে-শুনে পছন্দের গরুটির দরদাম করছেন। পছন্দ হলে ন্যায্য দামে কিনে খুশি মনে কোরবানীর পশু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। হাটের চারপাশ ঘুরে দেখা যায়, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ছিলো লক্ষণীয়। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিয়েছে হাট কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসন। ফলে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা গরু বিক্রেতা বলেন, ভারত থেকে গরু এবার আসে নাই তার পরে ও দাম অনেকটা কম। তারা আরো বলেন এবার গরুর দামও মোটামুটি ভালো পাওয়া যাচ্ছেনা।
চান্দিনা দোল্লাই নবাবপুর হাটে আসা বিভিন্ন ব্যাপারী জানান, প্রতি বছরের মত এবারো দোল্লাই নবাবপুর হাটে গরু এনেছেন।উক্ত হাটে এবার ভারতীয় গরু না আসলেও দেশী গরুতে জমজমাট ছিল পশুর হাট। তবে দাম একটু বেশি। তা হলেও কোরবানিতে দেশি গরু কিনতে আগ্রহ বেশী ক্রেতাদের। খামারিরা বলছেন, ভারতীয় গরু না আসার কারনে এ বছর তারা ভালো দামে গরু বিক্রি করতে পারছেন। তবে, ঈদকে ঘিরে গো-খাদ্যের দাম একটু বেড়ে গেছে।
একারনে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। সময় নিয়ে হাটে না আসা অনেকে বাড়ীতে গরু কিনে নেওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা অনেকটা কমেছে।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তানজিলা খন্দকার জানান চান্দিনায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৯৪৫ টি খামারের গরু বিভিন্ন পশুর হাটে নিচ্ছেন বিক্রেতারা।‘ভারতীয় গরু-ছাগল না এলেও কোরবানির পশুর হাটে এর কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
চান্দিনায় ছোট-বড় বিভিন্ন এলাকায় স্থায়ী ৫টি ও ১২টি অস্থায়ী হাট গড়ে উঠেছে। তবে অনেকের ধারনা বৃহত্তম পশুর হাট হচ্ছে দোল্লাই নবাবপুর পশুর হাট।তিনি বলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তদারকির জন্য আমরা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে সবসময় মনিটরিং করছি।’এসময় দোল্লাই নবাবপুর পশুর হাটের ইজারাদার মোস্তফা কামাল মামুন ও সার্জেন্ট সাদেকুল ইসলাম জানান, দেশের এ হাটে স্থানীয় খামারিসহ ব্যাপারিরা বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য নিয়ে আসছেন।
আশা করছি এবারের কোরবানিতে পশুর কোনও সংকট হবে না।কঠোর নিরাপত্তা ও চমৎকার আবহাওয়ার মধ্যে বাজার ব্যবস্থাপনায় রেকর্ড সংখ্যক ক্রেতা ও বিক্রেতার আগমনে পশুর হাট চলছে।নিরাপত্তার ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ জানান- ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে জালনোট চিহ্নিত করার যন্ত্র হাটে নিশ্চিত করা হয়েছে।এতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা খুব খুশি বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে চান্দিনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাবের মোঃ সোয়াইব জানান- কোরবানীর বাজারে গরু নিয়ে আসার সড়ক পথে চাঁদাবাজি বা কোন রকমের হয়রানির অভিযোগ যেন না হয় সেদিকের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সজাগ দৃষ্টি রাখছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে মনিটরিং করার মাধ্যমে পশুর হাটে গমন, অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়, সার্বিক বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।