চুরি করে এলাকা ছাড়া, ফিরে এসে হলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি

বরগুনার তালতলীতে দোকান ভেঙ্গে চুরির সময় হাতে নাতে ধরা পড়ার পর জেল খেটে এলাকা ছাড়েন তৎকালীন চোর ও বর্তমান উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি রিয়াজউদ্দিন প্রিন্স। এরপর দীর্ঘ সাত বছর এলাকার বাইরে থেকে সম্প্রতি এলাকায় ফিরে আসেন তিনি।

গত বছরের ৩০ নভেম্বর তালতলী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে তৎকালীন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। চলতি বছরে ১৫ ই নভেম্বর দীর্ঘ এক বছর পর রিয়াজউদ্দিন প্রিন্স এর বিষয়টি সামনে আসে। সেখানে দেখা যায় সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন প্রিন্সের নাম। যিনি দোকান চুরির অপরাধ করে জেল খেটে এলাকা ছেড়েছেন। কমিটির কাগজ সামনে আসতেই স্থানীয়রা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, এ কমিটির মাধ্যমে চোর রিয়াজউদ্দিন প্রিন্সকে পুরস্কৃত করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর তালতলী কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে অবস্থিত বানি কান্ত শীল এর দোকান ভেঙে চুরি করার সময় দোকানে ঘুমন্ত বাবুল শীল চুরির শব্দ পেয়ে ধাওয়া দেন ও ডাক চিৎকার করেন। মুহুর্তে পালানোর সময় পাহারাদার মনির, শাহজাহান মিয়া ও টহল পুলিশও তাদের ধাওয়া করে।

উপায় না দেখে চোর রিয়াজ উদ্দিন প্রিন্স পুকুরে ঝাপ দেয়।
এরপর ব্যাবসায়ীরা চোরের মাথা ন্যাড়া করে জুতার মালা গলায় দিয়ে থানা পুলিশে সোপর্দ করে।
সেই মামলায় জেল খেটে দীর্ঘ দিন জামিনে বেরিয়ে এলাকা ছাড়া থাকেন রিয়াজ উদ্দিন প্রিন্স। হঠাৎ ২০২২ সালের শেষের দিকে তালতলী আসেন তিনি। এসেই বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছেন বলে জানাগেছে।

বাবুল কান্ত শীল বলেন, আওয়ামী লীগের লোকের অভাব হয়েছে একজন চিহ্নিত চোরকে বানিয়েছে সেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি। এটা খুবই দুঃখের বিষয়। আমি মনে করি এতে করে চোর রিয়াজ উদ্দিন প্রিন্সকে পুরস্কৃত করেছে।

তালতলী দাবিউস টেলিকমের মালিক ছবির হোসেন বলেন, আমার দোকানে প্রিন্সের সাথী সালাম মোবাইল টিপে প্রিন্সের নাম্বারে বিকাশ অটো পে করে প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা করে মোট ৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এরপর ২০০০ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি তালতলী উপজেলা উপজেলা চেয়ারম্যান ও তালতলী ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজবি উল কবিরকে জানালে,ব্যবসায়ী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য দের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেয়। পরে ব্যবসায়ী সমিতির কমিটির লোকজনের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ৩০ শে ডিসেম্বরের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে মুছলেখা দিয়ে আসেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যাবসায়ীরা বলেন, ও এলাকায় ছিলোনা শান্তিতে ব্যাবসা করেছি। এখন আবার এলাকায় এসেছে আমরা খুব ভয়ে আছি। স্কুল গামী ছাত্রীরা নিচের রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করার সময় বিভিন্ন রকম অশালীন মন্তব্য করেন। কারও কাছে ওর নামে বিচার দিতেও ভয় পাচ্ছে। কারন তাকে শেল্টার দিচ্ছে কয়েকজন উঠতি নেতা।

তবে এ অভিযোগের বিষয় রিয়াজ উদ্দিন প্রিন্সের মুঠোফোনে কল দিলেও তাকে ফোনে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

বরগুনা জেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মুরাদ হোসেন, ও সম্পাদক সাইমুল ইসলাম রাব্বি বলেন, তালতলী উপজেলার পুর্নাঙ্গ কমিটি আমরা দেইনি। আগের কমিটির লোকজন দিয়েছে। এ বিষয়টি আমার তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের পর সাংগঠনিক ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles