গত রোববার ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। চারদিন পর আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা হচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিষ্টের। এবার পাঁচ ম্যাচের দ্বিপাক্ষীক সিরিজ খেলবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ভিন্ন ফরম্যাট, ভিন্ন দল নিয়ে আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এই সিরিজ দিয়েই শুরু করতে চায় দু’দল। ভারতের বিশাখাপত্নমে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি।
ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে স্বাগতিকদের ৬ উইকেটে হারিয়ে ষষ্ঠ শিরোপা জয় করে অস্ট্রেলিয়া । ঐ ফাইনালের রেশ কাটতে না কাটতে আবারও ২২ গজে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নামছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে বিশ্বকাপ শেষে এটিই প্রথম কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
দীর্ঘ দেড় মাস ব্যপি বিশ্বকাপের কারণে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য দলের বেশিরভাগ মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রামে রেখেছে দুই দল।
বিশ্বকাপ দলে থাকা মাত্র তিনজন খেলোয়াড় সূর্যকুমার যাদব, ইশান কিশান ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণাকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে রেখেছে ভারত। এদের মধ্যে বিশ্বকাপে সূর্য ৭ ও কিশান ২টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। অন্যদিকে, বিশ্বকাপ দল থেকে সাতজন খেলোয়াড়কে বাদ দিয়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলবে অস্ট্রেলিয়া।
সর্বশেষ কয়েকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অলরাউন্ডার হার্ডিক পান্ডিয়া। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে পড়া গোড়ালির ইনজুরি থেকে এখনও তিনি সুস্থ হতে না পারায় অস্টেলিয়া সিরিজে প্রথমবারের মত জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন টি-টোয়েন্টির এক নম্বর ব্যাটার সূর্য। তার ডেপুটি হিসেবে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে দায়িত্ব পালন করবেন ওপেনার ঋুতুরাজ গায়কোয়াড়। শেষ দুই ম্যাচের জন্য দলে ফিরবেন বিশ্বকাপ খেলা শ্রেয়াস আইয়ার।
অস্ট্রেলিয়া দলের নেতৃত্ব দিবেন গেল বছরের নভেম্বরে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি খেলা ম্যাথু ওয়েড। গত আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অসিদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মিচেল মার্শ। তার অধীনে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। মাত্রই বিশ্বকাপ শেষ হওয়ায় বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মার্শকে। সিরিজ শুরুর দু’দিন আগে দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন বিশ্বকাপ খেলা ডেভিড ওয়ার্নার। আগামী মাসে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে চাইছেন ওয়ার্নার। পাকিস্তান সিরিজ দিয়েই টেস্টকে বিদায় জানাবেন তিনি।
ওয়ার্নারের জায়গায় টি-টোয়েন্টি দলে যুক্ত করা হয়েছে অলরাউন্ডার অ্যারন হার্ডি। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়া স্পেন্সার জনসনের পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন পেসার কেন রিচার্ডসন।
তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি ভারত অধিনায়ক সূর্য। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলটি তারুণ্য নির্ভর। কিন্তু সকলেরই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। আইপিএলের মঞ্চে সকলের দারুন পারফরমেন্স আছে। সেই অভিজ্ঞতা এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে দারুন সহায়ক হবে। আমরা নিজেদের সেরা পারফরমেন্স করতে পারলে সিরিজ জয় অসম্ভব না। এজন্য সিরিজের শুরুটা ভালোভাবে করতে হবে আমাদের।’
সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলতে বদ্ধপরিকর অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ওয়েড। তিনি বলেন, ‘সদ্যই আমরা ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছি। বিশ্বকাপ দলের সাতজন খেলোয়াড় এই সিরিজে খেলবে। তাদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাওয়াটা বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। এবার আমরা টি-টোয়েন্টি সিরিজে নিজেদের প্রমান করতে চাই। নিজেদের সেরাটা উজার করে টি-টোয়েন্টিতেও দল ফলাফল অর্জন করতেই মাঠে নামবো আমরা।’
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ২৬বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ভারতের জয় ১৫টিতে এবং অস্ট্রেলিয়ার জয় ১০টিতে। ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। গেল বছরের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে দেখা হয় দু’দলের। ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো ভারত।
ভারত দল : সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), ঋুতুরাজ গায়কোয়াড়, ইশান কিশান, যশ^সী জয়সওয়াল, তিলক ভার্মা, রিঙ্কু সিং, জিতেশ শর্মা, ওয়াশিংটন সুন্দর, অক্ষর প্যাটেল, শিবম দুবে, রবি বিষ্ণই, আর্শদিপ সিং, প্রসিধ কৃষ্ণা, আবেশ খান, মুকেশ কুমার ও শ্রেয়াস আইয়ার (শেষ দুই ম্যাচের জন্য)।
অস্ট্রেলিয়া দল : ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক), জেসন বেহরেনডর্ফ, সিন এ্যাবট, টিম ডেভিড, নাথান এলিস, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, তানভির সাংহা, ম্যাট শর্ট, স্টিভ স্মিথ, মার্কাস স্টয়নিস, কেন রিচার্ডসন, অ্যারন হার্ডি ও এডাম জাম্পা।