শেষের জন্যই সেরাটা রেখে দিয়েছিলাম : কামিন্স

 

বিশ্বকাপ শিরোপাজয়ী অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেয়া ছিল ক্রিকেটে মর্যাদার সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহন বলে মন্তব্য করেছেন প্যাট কামিন্স। সাথে তিনি একথাও বলেছেন, শেষের জন্যই নিজেদের সেরাটা রেখে দিয়েছিলাম। রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ফাইনালে স্বাগতিক ভারতকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে শিরোপা জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক এমন মন্তব্য করেন।

 

অস্ট্রেলিয়ার এই শিরোপা জয়ের পিছনে কামিন্সের ব্যক্তিগত কিছু অর্জণও রয়েছে। টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের পাঠানোর সিদ্ধান্ত দিন শেষে কাজে এসেছে। টুর্নামেন্টে আগের ১০ ম্যাচে একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত ভারত প্রথমে ব্যাটিং করে ২৪০ রানে অল আউট হয়।

 

ফাইনাল শেষে কামিন্স বলেছেন, ‘এটা সত্যিই অনেক বড় অর্জন। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহন, বিশ্বকাপ জয় , বিশেষ করে ভারতের মাটিতে তাদের সমর্থকদের সামনে এই জয় সত্যিই স্মরণীয়।’

 

২০২৩ সালে কামিন্সের ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে বেশ চড়াই উৎরাই পার করতে হয়েছে। মার্চ মাসে ভারত সফরের মাঝপথে মায়ের অসুস্থতার কারনে তাকে দেশে ফিরে যেতে হয়েছিল। ঐ সময় তার মা মারিয়ার মৃত্যু হয়। কামিন্স বলেন, ‘বছরটা আমার কাছে অনেক বড় মনে হয়েছে। আমি জানি দেশে পরিবারের সবাই আমাদের খেলা দেখেছে। এইমাত্র বাবার কাছ থেকে বার্তা পেয়েছি। তারা সবাই ভোর ৪টা(অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময়) পর্যন্ত জেগে ছিল। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলতে হলে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। দলের প্রায় প্রত্যেকেই তাই করে। এ বছর আমরা দেশের বাইরে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছি যার ফল হয়তো আজ পেলাম।’

ভারতীয় ব্যাটার বিরাট কোহলি ৭৬৫ রান করে বিশ্বকাপে এক আসরে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহের নতুন রেকর্ড গড়েছেন। ফাইনালে ৫৪ রানে কোহলিকে নিজের শিকারে পরিনত করেন ফাস্ট বোলার কামিন্স। ঐ সময় ভারত ৪ উইকেটে ১৪৮ রান সংগ্রহ করেছিল। কামিন্স ৩৪ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

 

ফাইনালের আগে কামিন্স বলেছিলেন ঘরের দর্শকদের সামনে স্বাগতিক দলকে নিশ্চুপ করে দেবার মত ভাল অনুভূতি আর হতে পারেনা। কোহলির উইকেট ফাইনালের সবচেয়ে মধুর স্মৃতি হয়ে থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ৩০ বছর বয়সী কামিন্স বলেছেন, ‘আমার কাছে তাই মনে হয়। দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেবার পরই পুরো স্টেডিয়ামে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছিল তা আমরা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম। এমন একটা সময় মনে হচ্ছিল কোহলি তার স্বাভাবিক নিয়মে খেলে আরো একটি সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে, সে কারনে এই উইকেটটি দারুন স্বস্তির ছিল।’

২৪১ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়া ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। কিন্তু ১৩৭ রান করে ম্যাচ সেরা ট্রাভিস হেড অস্ট্রেলিয়াকে রক্ষা করেছেন। চতুর্থ উইকেটে মার্নাস লাবুশেনের (৫৮*) সাথে ম্যাচ জয়ী ১৯২ ইনিংস খেলে হেড সাত ওভার বাকি রেখে রেকর্ড ষষ্ঠবারের মত অস্ট্রেলিয়াকে শিরোপা ঘরে তুলতে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রেখেছেন।

অথচ সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে হাতের হাড়ে চিড় ধরায় বিশ্বকাপেই খেলার কথা ছিলনা হেডের। কাল ফাইনালে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন। রোহিত ৩১ বলে ৪৭ রান সংগ্রহ করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের শিকারে পরিনত হয়েছেন।

কামিন্স বলেন, ‘ট্রেভিস হেড দুর্দান্ত খেলেছে। আমি মনে করি সকলের পাশাপাশি কোচ এন্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড ও নির্বাচক জর্জ বেইলিরও কৃতিত্ব পাওয়া উচিৎ। ইনজুরি সত্ত্বেও হেডকে দলভূক্ত করা ছিল প্রচন্ড ঝুঁকির। সে যদি পারফর্ম করতে না পারতো তবে দল নির্বাচন নিয়ে প্রচন্ড সমালোচনা হতো। কিন্তু বিশ্বকাপের মত টুর্ণামেন্টের শিরোপা জিততে হলে ঝুঁকি নিতেই হবে।’

 

এর আগে জুনে ওভালে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে ভারতকে ২০৯ রানের বিধ্বস্ত করার ম্যাচটিতে ১৬৩ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন হেড।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles