বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আরো একবার পরাজিত হবার পর দক্ষিন আফ্রিকার কোচ রব ওয়াল্টার দাবী করেছেন যে উত্তেজনাপুর্ন ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩ উইকেটের ওই পরাজয়ে প্রোটিয়াদের ‘চোকারিত্বের প্রমান মেলেনি।’ এমনকি এটি চোকের কাছাকাছিও যায়নি বলে দাবি করেছেন প্রোটিয়া কোচ।
কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২৪ রানে চার উইকেট হারায় দক্ষিন আফ্রিকা। তবে ডেভিড মিলারের ১০১ রানে ভর করে অলআউট হবার আগে ২১২ রান যোগ করে প্রোটিয়ারা। ওই সামান্য পুঁজিকে ভর করেই অজিদের সঙ্গে তীব্র লড়াই করেছে দক্ষিন আফ্রিকার বোলাররা। এক পর্যায়ে ১৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সংকটের মধ্যে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। যদিও শেষ পর্যন্ত ১৬ বল হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্য পুরণ করে প্যাট কামিন্সের দল।
এটি ছিল বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার পঞ্চম পরাজয়। তন্মধ্যে ১৯৯৯ ও ২০০৭ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি ছিল তাদের তৃতীয় হার। ওয়াল্টার বলেন, ‘চোকের সংজ্ঞা কি, তা আপনার জানা উচিৎ। আমার মতে তাদেরকেই চোক বলে যারা জয়ের পর্যায়ে থেকেও ম্যাচে হেরে যায়। কিন্তু আখানে আমরা পিছিয়েই ছিলাম, আসলে আমরা ফেরার জন্য লড়াই করেছি এবং একটি সম্মানজনক স্কোর গড়েছি যার মাধ্যমে কিছুটা লড়াইয়ের সুযোগ সৃস্টি হয়েছে।’
তিনি যোগ করেন,‘ পরে তারা কিছুটা ছন্দ হারিয়েছিল, আর আমরা লড়াই করে নিজেদের ফিরিয়ে নিয়েছি। সুতরাং এখানো চোক বা চোকারিত্বের কোন নাম গন্ধও ছিল না। দুটি ভালো দলের মধ্যে ত্রীব্র প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়েছে।’
‘চোকার’ শব্দটি দক্ষিন আফ্রিকা দলের সঙ্গে স্থায়ী ভাবে লেপ্টে আছে। সামর্থ্যবান দল হবার পরও গুরুত্বপুর্ন মুহুর্তে দলটির আত্মসমর্পনের কারণেই এমন খেতাব লাভ করেছে প্রোটিয়ারা। ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে তারা হেরে গিয়েছিল শেষ মুহুর্তের নাটকীয়তায়। অথচ শেষ চার বল থেকে জয়ের জন্য তাদের প্রয়োজন ছিল মাত্র এক রান। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক রানআউটে পরাজিত হয়েছিল প্রোটিয়ারা।
চার বছর পর বৃস্টি আইনের নিয়ম সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞানের অভাবে হার মেনেছিল দক্ষিন আফ্রিকা। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছিল তারা। শেষ বলে ছক্কা হাকিয়ে ম্যাচটি জিতে যায় কিউইরা।
এবারের বিশ্বকাপ আসরের গ্রæপ পর্বের অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে দক্ষিন আফ্রিকা। ৯ ম্যাচের সাতটিতেই জয় পেয়েছে তারা। দলীয় অধিনায়ক তেম্বা বাভুমার প্রশংসা করে প্রোটিয়া কোচ ওয়াল্টার বলেন, তিনি বাভুমাকে নিয়ে গর্বিত। যদিও ইনজুরি আক্রান্ত অধিনায়ক দলকে বিশ্বকাপের ব্যর্থতা থেকে মুক্তি দিতে পারেনি।
হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে ১০০% ফিট না হওয়া সত্তে¡ও বাভুমা (সেমিফাইনাল) ম্যাচটি খেলেন এবং চতুর্থ বলে শূন্য রানে আউট হন। অসুস্থতার কারণে ওপেনিং ব্যাটসম্যান বাভুমা বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচে অংশ নিতে পারেনি। আসরে বাকী আট ম্যাচে তিনি করেছেন মাত্র ১৪৫, যেখানে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৩৫রান।
প্রোটিয়া অধিনায়ক প্রসঙ্গে ওয়াল্টার বলেন,‘ আমি তাকে শুধু এটুকুই বলেতে পারি তাকে নিয়ে আমি গর্বিত।’