ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের আশায় রোহিতের শৈশবের কোচ দিনেশ

 

 

ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে রোহিত শর্মা যদি এবারের বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করতে পারে তবে নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষ হিসেবে মনে করবেন তার ছোটবেলার কোচ দিনেশ লাড।

রেলওয়ের সাবেক কর্মকর্তা ও ক্রিকেটার দিনেশ ৩০ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক খেলোয়াড়কে হাতে ধরে শিক্ষা দিয়েছেন। যার মধ্যে রোহিত ও জাতীয় দলের আরেক সতীর্থ শার্দুল ঠাকুরও রয়েছেন। মুম্বাইয়ের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা বোরিভালির স্বামী বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক স্কুলে দিনেশ মূলত কোচিং করিয়ে থাকেন। মুম্বাইয়ের জনপ্রিয় ক্রিকেট নার্সারি শিবাজি পার্ক থেকে যা বেশ দূরে অবস্থিত।

বার্তা সংস্থা এএফপির সাথে এক সাক্ষাতকারে দিনেশ বলেছেন, ‘ক্রিকেটের জন্য আমি কখনো কারো কাছ থেকে কোন অর্থ নেইনি। কোন অভিভাবকের কাছ থেকে আমি কখনই কিছুই চাইনি। এটা আমি ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা থেকেই করেছি।’

৩৬ বছর বয়সী রোহিতের নেতৃত্বে ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জণ করেছে। আগামী বুধবার মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে শেষ চারের লড়াইয়ে ভারত নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। দিনেশ বলেছেন, ‘ভারত সেমিফাইনালে জিততে পারে তবে ঐ মুহূর্তে আমি নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে মনে করবো। আর যদি বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করতে সক্ষম হয় তবে নিজেকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মানুষ হিসেবে মনে হবে।’

ওয়ানডে ক্রিকেটে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরির মালিক রোহিতের এবারের বিশ্বকাপে ব্যাটিং গড় প্রায় ৫৬। ১৯৯৯ সালের মে মাসে স্কুল দলের সামার ক্যাম্পে ১২ বছর বয়সী রোহিতের উপর প্রথম নজড় পড়ে দিনেশের। এ সম্পর্কে দিনেশ বলেন, ‘ঐ সময় ১০ ওভারের একটি ম্যাচে রোহিতের দল ৬৭ রান করেছিল। আমরা সেই টার্গেট সাত কিংবা আট ওভারে পার করেছিলাম। ঐ সময় রোহিত অফ-স্পিন বোলিং করতো, ব্যাটিং নয়। দুই ওভারে সে মাত্র পাঁচ/ছয় রানে এক উইকেট শিকার করেছিল।’

সে সময় দিনেশ কোচ হিসেবে রোহিতকে স্কুল দলে সুযোগ দেন ও এ ব্যপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে আলাদা করে কথা বলেন। সে সময় রোহিত তার চাচার কাছে থাকতেন। প্রতি মাসে রোহিতের চাচার পক্ষে প্রতি মাসে স্কুলের বেতন বাবদ ২৭৫ রুপী দেয়া সম্ভব ছিলনা। সে কারনে প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে রোহিতের জন্য অনুরোধ করে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন দিনেশ।

কয়েক বছর পর দিনেশ বুঝতে পারেন তিনি একজন প্রতিভাবান ব্যাটার হাতে পেয়েছেন। একদিন তিনি দেখতে পারেন অনুলীলনের আগে রোহিত একের পর এক স্ট্রেইট ব্যাটে শট খেলছেন। সাথে সাথে রোহিতকে ওপেনার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অনুশীলন শুরু করেন। নতুন পজিশনে প্রথম ম্যাচেই রোহিত করেছিলেন ১৪০ রান। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দিনেশ বলেন, ‘রোহিত একজন জাত ব্যাটার, আমার খুব বেশী কিছু তাকে শেখাতে হয়নি।’

১৯৯৩ সালে মুম্বাই যুব ক্রিকেট ও সিনিয়র রঞ্জি ট্রফির দলের জন্য প্রায় ৯০ জন খেলোয়াড়কে কোচিং করিয়েছিলেন দিনেশ। ঐ সময় বেশ কিছু খেলোয়াড়কে কোচিং করানোর সুযোগ পেয়েছেন দিনেশ যারা বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। কোচিংয়ে অনন্য অবদানের জন্য জাতীয় পুরস্কার হিসেবে দ্রোনাচার্য্য এ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন দিনেশ।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home11/onzcfyam/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464