সাজেকে বনানি বনবিহারে ১৮ তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান উদযাপন

রাঙ্গামাটি বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে বনানি বন বিহারে ১৮ তম শুভ দানোত্তম মহান কঠিন চীবর দান অনুষ্টিত হয়েছে।

বনানি বন বিহারের সভাপতি শাক্যবদি চাকমা বিহারের অধ্যক্ষ কৃপারত্ন স্থবির ভান্তের হাতে ২৪ ঘন্টায় কোমর তাঁতে তৈরি চীবর হস্তান্তর করেন।

পসহাড়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল ১০ নভেম্বর শুত্রুবার থেকে বনানি বন বিহার প্রধান কৃপারত্ন স্থবিরের হাতে চীবর হস্তান্তরের মাধ্যমে শুরু হয় দুইদিন ব্যাপী এ অনুষ্ঠান।

আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে বিশাখা নামে একজন পুণ্যবতী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে বুদ্ধকে এই কাপড় দান করেন। সেই অনুকরণে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুষ্ঠানটি পালিত হয়ে আসছে।

চীবর দানের আজ ১১ নভেম্বর দিনের দ্বিতীয় পর্বে শনিবার বিকেলে কল্পতুরু ও কঠিন চীবর মাথায় নিয়ে নেচে গেয়ে চীবর দানে যোগ দেয় হাজারো পুণ্যার্থী। চীবর দানে পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, বুদ্ধমুর্তি দানসহ নানান দান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় বনানি বন বিহারে।

এসময় চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বনভান্তের শিষ্যসংঘ অন্যতম শিষ্য শ্রদ্ধেয় জ্ঞানপ্রিয় মহাস্হবির ভান্তে রাঙ্গামাটি রাজ বন বিহার। কাচালং আর্য্যপুর বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় বৌদ্ধরত্ন মহাস্হবির ভান্তে, অজল চুগ বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় সত্যমতি ভান্তেসহ বিভিন্ন শাখা বন বিহার থেকে প্রায় শতাধিক ভিক্ষু সংঘ উপস্তিত থাকেন। অনুষ্টান পরিচালনা করেন অরেন্টু চাকমা জারুলছড়ি নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক, অনুষ্টানে স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন শাক্যবদি চাকমা অনুষ্টান উদযাপন কমিটির সভাপতি।

দু’দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে হাজারো বৌদ্ধ পুর্ণাথী অংশগ্রহণ নেন। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাসের শেষ দিনে প্রবারণা পূর্ণিমা পালনের পরদিন থেকে দীর্ঘ এক মাস ধরে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে মাস ব্যাপী ধারাবাহিকভাবে চলে এই কঠিন চীবর দান উৎসব চলবে। ১০০টি বন বিহার শাখায় এ রীতিতে চীবর দান অনুষ্ঠিত হবে। আগামি ২৩ ও ২৪ নভেম্বর বন বিহার শাখা প্রধান রাঙামাটি রাজবন বিহারে অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ নভেম্বর এ দানোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।

উল্লেখ্য, আড়াই হাজার বছর আগে তথাগত ভগবান বুদ্ধের আমলে বিশাখা নামে একজন পুণ্যবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে এই কাপড় বুদ্ধকে দান করেন। এই অনুকরণে ৪০ বছর আগে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে। পরিনির্বাণপ্রাপ্ত বনভান্তে এই অনুষ্ঠানের প্রচলন করেন। সে অনুযায়ী বন বিহার শাখাগুলোতে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home11/onzcfyam/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464