বোধিপুর বন বিহারের সভাপতি বিজয় কুমার কার্বারী বিহারের অধ্যক্ষ জিনবোধি মহাস্থবিরের হাতে ২৪ ঘন্টায় কোমর তাঁতে তৈরি চীবর হস্তান্তর করেন।
পসহাড়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান কঠিন চীবর দান উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার থেকে বোধিপুর বন বিহার প্রধান জিনোবোধি মহাস্থবিরের হাতে চীবর হস্তান্তরের মাধ্যমে শুরু হয় মাসব্যাপী এ অনুষ্ঠান।
আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে বিশাখা নামে একজন পুণ্যবতী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে বুদ্ধকে এই কাপড় দান করেন। সেই অনুকরণে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুষ্ঠানটি পালিত হয়ে আসছে।
চীবর দানের দিনের দ্বিতীয় পর্বে রোববার বিকেলে কল্পতুরু ও কঠিন চীবর মাথায় নিয়ে নেচে গেয়ে চীবর দানে যোগ দেয় হাজারো পুণ্যার্থী। চীবর দানে পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, বুদ্ধমুর্তি দানসহ নানান দান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। পাহাড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
এসময় চীবর দান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বনভান্তের শিষ্যসংঘ প্রধান ও রাঙামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির, ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবিরসহ অর্ধ শতাধিক বুদ্ধ ভিক্ষু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দু’দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে শত শত বৌদ্ধ পুর্ণাথী অংশগ্রহণ নেন। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাসের শেষ দিনে প্রবারণা পূর্ণিমা পালনের পরদিন থেকে দীর্ঘ এক মাস ধরে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে মাস ব্যাপী ধারাবাহিকভাবে চলে এই কঠিন চীবর দান উৎসব চলবে। ১০০টি বন বিহার শাখায় এ রীতিতে চীবর দান অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ ও ২৪ নভেম্বর বন বিহার শাখা প্রধান রাঙামাটি রাজবন বিহারে অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ নভেম্বর এ দানোৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।
উল্লেখ্য, আড়াই হাজার বছর আগে তথাগত ভগবান বুদ্ধের আমলে বিশাখা নামে একজন পুণ্যবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে এই কাপড় বুদ্ধকে দান করেন। এই অনুকরণে ৪০ বছর আগে থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই অনুষ্ঠান পালিত হয়ে আসছে। পরিনির্বাণপ্রাপ্ত বনভান্তে এই অনুষ্ঠানের প্রচলন করেন। সে অনুযায়ী বন বিহার শাখাগুলোতে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়।