ভৈরবে ড্রেজারে বালি উত্তোলনে হুমকির মুখে ফসলি জমি

 

 

 

ভৈরবে গোছামারা খাল খনন প্রকল্পের ওয়ার্কিং অর্ডার ( কাজের অনুমোদন পাওয়ার আগেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ১ মাস যাবৎ ড্রেজারে বালি উত্তোলন করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।

শুধু তাই নয় নিয়ম অমান্য করে লোড ড্রেজারে বালি উত্তোলনের ফলে কৃষকদের ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়বে বলে স্থানীয় কৃষকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ।

এছাড়া নিয়ম মেনে বালি উত্তোলন না করায় বালি উত্তোলন বন্ধে প্রধান মন্ত্রী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী ।

জানা যায়, গোছামারা থেকে কালিকাপ্রসাদ ছিদ্দিরচর পর্যন্ত খালটি ৩ টি ধাপে খনন করা হবে । খালটি খননের জন্য এলজিইডি থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা টেন্ডার আহবান করা হয়েছে । কাজটি পায় মেসার্স মমিনুল হক এন্ড হাসান কনষ্ট্রাকশন জেভী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান । কিন্তু কাজের ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী খাল খনন কাজটি ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়ার কথা। ওয়াক অর্ডারে খালটির ৭০ ভাগ এসকো ভেটার (ভেকু) এবং ৩০ ভাগ ড্রেজার দিয়ে খননের কথা। এছাড়া খল থেকে উত্তোলিত বালি খালের ২ পাড়ে রেখে বাধঁ দিবে। যাতে খালের পাড়ের জমি ভেঙে না যায় এবং খালের ২ পাড়ে গাছ লাগাতে হবে । উত্তোলিত বালি বিক্রি করা যাবেনা । কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়ম ভঙ্গ করে ওয়ার্ক অর্ডারের প্রায় ১ মাস পূর্ব থেকে বেশ কয়েকটি ড্রেজারে বালি উত্তোলন করে বিক্রি করে দিচ্ছে । সম্প্রতি বালি উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ।

এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষক শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, ড্রেজারে বালি উত্তোলনের ফলে খালের উপর বেশ কয়েকটি সেতুর নীচের মাটি সরে গিয়ে সেতু গুলো ভেঙে যেতে পারে। এতে কয়েকটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে দূর্ভোগ পোহাতে হবে । একই অভিযোগ করেছেন মোঃ মোস্তফা মিয়া, মিলন মিয়াসহ অনেক কৃষক ।

এ বিষয়ে কৃষক আজিজুর রহমান জানান, সরকারি নিয়ম মতে ভেকু বা এসকে ভেটর দিয়ে বালি উত্তোলন করলে ফসলি জমির ক্ষতি হবেনা । কিন্তু যেভাবে ড্রেজারে বালি উত্তোলন করছে । এতে করে ফসলি জমি ভেঙে মারাত্নক ক্ষতি হবে কৃষকের । কয়েক শত কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হবে । তাই ড্রেজারে বালি উত্তোলন বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন কৃষকরা ।

 

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা প্রকৌশলী আবুল হাসানাত মহিউদ্দিন জানান, খাল খননের ওয়ার্ক অর্ডার এখনো তিনি পাননি । ওয়ার্ক অর্ডার হয়তো ১/২ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। তাছাড়া ডিজাইনের বাইরে খাল খননের কোন সুযোগ নেই । ডিজাইনের বাইরে কাজ করলে ঠিকাদারকে বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নেয়া হবে ।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ জানান, ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার আগেই ড্রেজারে খাল খননের ফলে কৃষকদের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কৃষকদের এমন অভিযোগ পাওয়ার ফলে আমরা খাল খনন বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি । তাছাড়া সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সঠিক নিয়মে খাল খনন করতে হবে। খননকৃত বালি অন্যত্র বিক্রি করা যাবেনা । যদি কেহ বালি বিক্রি করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মমিনুল হক এন্ড হাসান কনষ্ট্রাকশন জেভী এর সত্ত্বাধিকারী এবং ঠিকাদার মমিনুল হক সেলিম ওর্য়াক অর্ডারের আগে ড্রেজিংয়ে বালি উত্তোলনের বিষয়ে বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ড্রেজিং এর মাধ্যমে খাল খনন করে দেখা হচেছ এখানে মাটি ও বালির পরিমাণ কতটুকু। তাছাড়া তিনি আরো বলেন, বালি রাখার জায়গা নেই বালি রাখবো কোথায়? বালি বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, কোটি কোটি টাকার বালি বিক্রি করে ফেলছি, অনেকেই সংবাদ প্রচার করেছে, আপনারাও লিখেন। ওয়ার্ক অর্ডারে ভেকু এবং ড্রেজারে বালি উত্তোলনের অনুমোদন রয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, এমপি সাব না চাইলে খাল খনন করবো না।

Related Articles

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles


Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (1) in /home11/onzcfyam/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464

Notice: ob_end_flush(): Failed to send buffer of zlib output compression (1) in /home11/onzcfyam/public_html/wp-includes/functions.php on line 5464