ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গতকাল বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের দুর্দান্ত জয়ের পর কোচ জোনাথন ট্রট বলেছেন তিনি এদেশের ছেলে-মেয়েদের আরো বেশী করে ক্রিকেটের প্রতি উৎসাহিত করতে চান । যদিও সামাজিক বিভিন্ন বিধিনিষেধের কারনে আফগানিস্তানে নারীদের খেলাধুলার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
গতকাল বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ৬৯ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনের জন্ম দিয়েছে আফগানিস্তান। একইসাথে এর মাধ্যমে বিশ্বকাপে টানা ১৪ ম্যাচের পরাজয়ের বৃত্ত থেকেও বেরিয়ে এসেছে দলটি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে প্রাকৃতিক দূর্যোগও একটি অন্যতম বড় সমস্যা। সম্প্রতি বেশ কিছু বড় ভূমিকম্পে সেখানে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাঠের বাইরের কঠিন এই সমস্যাগুলোকে সামনে নিয়ে এসে ট্রট বলেছেন, ‘এদেশে শুধুমাত্র ক্রিকেটের প্রতি একজন খেলোয়াড়ের মনোযোগ থাকে না। নিজেদের জীবনে বিভিন্ন ধরনের বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে আজ তারা এই পর্যায়ে এসেছে। প্রাকৃতিক নানা দূর্যোগের সাথে আরো কিছু সমস্যা তাদের স্বাভাবিক জীবনকে কঠিন করে তুলেছে। ক্রিকেটে এই ধরনের জয় নিশ্চিতভাবেই দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে। একইসাথে ছেলে মেয়েদের হাতে ক্রিকেট ব্যাট ও বল তুলে দিতে উৎসাহিত করবে।’
রোববারের ম্যাচের আগে আফগানিস্তানের বিশ্বকাপে মাত্র একটি ম্যাচে জয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৫ সালে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে খেলতে এসে ঐ আসরে স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছিল আফগানরা। ২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ৯টি ম্যাচের সবকটিতেই পরাজিত হয়েছিল আফগানিস্তান। এর মধ্যে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে ১৫০ রানের বিশাল পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেয়েছিল। গতকাল ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজের ৮০ ও ইকরাম আলিখিলের ৫৮ রানে ভর করে আফগানিস্তান ২৮৪ রানের লড়াকু স্কোর গড়ে তোলে। জবাবে ইংল্যান্ডের হয়ে হ্যারি ব্রæকের ৬৬ রান সত্তে¡ও আফগান দুই স্পিনার মুজিব উর রহমান ও রশিদ খানের ৩টি করে উইকেট শিকারে ইংল্যান্ডের ইনিংস ১২৫ রানেই গুটিয়ে যায়।
ইংল্যান্ড ও আফগানিস্তান দুই দলই তিন ম্যাচে একটি জয় ও দুটিতে পরাজিত হয়েছে। ট্রট বলেন, ‘এই জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই মর্যাার দিক থেকে এবং ব্যবধানের দিক থেকেও। এর মাধ্যমে আশা করছি দলের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। শুধুমাত্র বিশ্বকাপ নয়, ভবিষ্যতে অন্য ম্যাচগুলোতেও এর প্রভাব পড়বে।’
বিশ্বকাপের অঘটন সম্পর্কে ট্রট অবগত আছেন। ২০১১ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে ট্রট ৯২ রান করলেও তার দল ইংল্যান্ড আয়ারল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছিল। ট্রট বলেন, ‘এটাই বিশ্বকাপের সৌন্দর্য্য। একজন খেলোয়াড় ও কোচ হিসেবে এই ধরনের অর্জন সত্যিই বিশেষ কিছু। আমরা বিশ্বের যেকোন দলের বিপক্ষে জেতার ক্ষমতা রাখি।’
পরের ম্যাচে আফগানিস্তানের প্রতিপক্ষ গতবারের রানার্স-আপ নিউজিল্যান্ড। গত দুইবারের রানার্স-আপ নিউজিল্যান্ড এই ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই ফেবারিট। ট্রটের বিশ্বাস টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ইংলিশ খেলোয়াড়দের সাথে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা কাল কাজে এসেছে। তারা ইংলিশদের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানে। আর সেই অভিজ্ঞতাই কাল আমার খেলোয়াড়রা কাজে লাগিয়েছে।’