নীলফামারী কিশোরগঞ্জের নিতাই উচ্চ বিদ্যালয়ে রাতের আঁধারে গাছ কাটা, স্কুলের প্রধান ফটক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির নামের ফটক ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় মোঃ মাঈনুল আরেফীন ওরফে নিয়াজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন এলাকাবাসী ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি মোঃ তৌহিদুর রহমান। তাই প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার জন্য তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবী নিয়ে উপজেলা নির্বাাহী অফিসার বরাবর আবেদন দিয়েছেন তারা।
অভিযোগের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জাানা যায়, ওই ইউনিয়নের নির্বাচনের সময় প্রতিপক্ষের কর্মী-সমার্থকের বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও মারপিট করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন নিয়াজ চৌধুরী। এখন বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি সেজে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছেন- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস পোস্ট করায় ওই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীর ছাত্র খোকন মিয়াকে বেদম মারপিট ও নির্যাতন করেন তিনি। ঘটনাটি সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর/২৩) ঘটেছে এবং একই দিনে রাতের আঁধারে স্কুলের প্রধান ফটক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক প্রধান শিক্ষক মৃত মকবুল হোসেনের নাম ফটক ভাংচুর করেন নিয়াজ চৌধুরী। তার দুই দিন পর ছয়ই সেপ্টেম্বর রাতে স্কুলের মাঠের চতুর দিকের অনেক ফল ও কাঠের গাছ কেটে বিক্রি করেন নিয়াজ চৌধূরী ও তার দলের সদস্যরা।
অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিতাই উচ্চ বিদ্যালয়ের উপস্থিত হলে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ফটক ভাংচুর ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির নাম ফলক ভাঙ্গা অবস্থায় আছে এবং মাঠে অনেক গাছের কাটা গোড়া পড়ে আছে। বিষয়টি জানতে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর সালাম এর কক্ষে গেলে তিনি বলেন, ওই দিন ঈদে মিলাদুন্নবী হওয়ায় স্কুল বন্ধ ছিলো। কে বা কাহারা রাতের আঁধারে গাছ কেটেছে আমরা জানি না। গাছ কাটার বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়া আছে।
ওই প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীর ছাত্র খোকন মিয়ার কাছে নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাই বলেন, আমি পোষ্টটি করায় বাড়িতে এসে নিয়াজ চৌধুরীর লোকজন আমাকে মারধোর করে। আর বলে আমি যেন বলি, আমাকে এটা সাবেক সভাপতি মোঃ তৌহিদুর রহমান করতে বলেছে।
স্থানীয় হায়দার আলী তারিফ ও সইদুল ইসলাম বলেন, নিয়াজ চৌধুরী নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই এলাকায় তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মানুষের ক্ষতি করছেন। স্কুলের গাছ কাটার দিনে আমাদেরও অনেক গাছ কেটে নিয়ে যায়। এভাবে চলতে থাকলে স্কুলের বিশাল ক্ষতি হবে। তাই আমরা তদন্ত সাপেক্ষে নিয়াজ চৌধুরী ও তার দলের উপর্যুক্ত শাস্তি চাই।
এবিষয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান বলেন, রক্ত আর মা-বোনের ইজ্জ্বতের বিনিময়ে এই দেশকে স্বাধীন করেছি। স্বাধীন দেশে অসৎ মানুষের কাছে এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিম্মি। এখানে ছেলে-মেয়েরা কি শিখবে? নিয়াজ চৌধুরী একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে এই ইউনিয়নে। কিছু বলার নেই! বললে শুরু হবে বাড়ি-ঘর ভাংচুর। এমন এক মানুষের হাত থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হবে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমার অনুরোধ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হোক।
জানতে চাইলে মোঃ মাঈনুল আরেফীন ওরফে নিয়াজ চৌধুরী বলেন, আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ বানোয়াট ও মিথ্যা। আমি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কখনো চাইবো না। প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণীর ছাত্র খোকন মিয়া আমার বিরুদ্ধে ফেসবুক স্ট্যাটাস ছাড়ায় তাকে আমি আমার বাসায় নিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছি,যেনো কখনো আর এসব না করে,তাকে কোনো ধরনের অত্যাচার বা নির্যাতন করি নাই।
এবিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের মেইন ফটক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিন নাম ফটক ও গাছ কাটার একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে।