এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার পিপিএম
তোমাকে নিয়ে লেখার স্পর্ধা
আমার কখনই ছিলনা।
তবুও অদম্য এক ইচ্ছাশক্তি
আমার কলমকে পরিচালনা করেছিল বোধ হয়!
কিন্তু, তোমাকে নিয়ে লিখতে গিয়ে
শত কবিতা ছিঁড়ে ফেলেছি,
হাজার হাজার শব্দ স্রোতস্বিনীতে ছুঁড়ে দিয়েছি,
ছেঁড়া কাগজগুলো সহস্র যোজন পথ ভাসতে ভাসতে তলিয়ে যায় নি একটিও!
তারা সব দিগন্ত থেকে দিগন্ত পেরিয়ে
কোনও এক মোহনায় জড়ো হয়ে
একটি কবিতায় রূপ নিয়েছে।
কবিতা থেকে শব্দমালা ছুটে যেতে পারে ভেবে
দূর দিগন্ত থেকে ঝিরি ঝিরি ঢেউগুলো এসে
মাঝে মাঝে আলতো করে ছুঁয়ে যায়।
নক্ষত্রের আলো সারারাত নির্ঘুম জেগে ঊষা অব্দি মোহনাতে পাহারা দেয়,
একটি শব্দও যেন হারিয়ে না যায়।
কি নাকি অদ্ভুত আবৃত্তি শোনা যায় গভীর রাতে,
প্রকৃতি নিভৃতে কবিতা শোনে প্রাণ ভরে!
অতিপ্রাকৃত আবৃত্তি সুরের মায়াজালে পড়ে,
অদৃশ্য ভীতি উপেক্ষা করে,
উৎসুক জনতার স্রোত নামে কবিতা ঘিরে।
টুকরোগুলোকে লক্ষ্য করে নবীন জেলে একবার জাল ছুঁড়েছিল।
শূন্যে জাল ভেসে থেকে অদৃশ্য টানে রশি খুলে গিয়ে লক্ষ্যের বাইরে পড়ে তলিয়ে যায়!
নৌকার মাঝিরা মাঝে মাঝে মোহনায় নৌকা ভিঁড়াবার চেষ্টা করেও পারেনি,
একবার এক গৃহবধূ কলসি দিয়ে জল সরাতে গিয়ে কাগজের টুকরোর গায়ে লাগতেই কলস ভেসে যায়।
কোনও অপশক্তিই তার কোনও ক্ষতি করতে পারেনি
হাজার প্রতিকুলতা অনায়াসে কাটিয়ে উঠেছে
কোনও এক ঐশ্বরিক শক্তির আশীর্বাদে।
গ্রামবাসীরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো-
কাগজের টুকরোগুলোকে তোমরা সরাতে যেওনা,
পীর,ফকির,সাধু,তান্ত্রিক কতজন এলো
সমাধান মিললো না কিছুতেই!
ধীরে ধীরে দর্শনার্থীর ভীঁড় বাড়তে থাকলো,
কেউ কেউ প্রার্থনা আর পুজো দিতে শুরু করলো,
একদিন এমন ঘটনার বিজ্ঞাপন চোখ পড়ল আমার
কবিতা আর কবির নাম সেখানে দৃশ্যমান হয়েছে।
এ নামে অনেকেই এসেছেন সেখানে
কিন্তু লাভ হয়নি মোটেও।
ঘটনার কৌতূহলে স্রোতের অনুকূলে
শত সহস্র পথ হেঁটে একদিন প্রত্যুষে
আমি পৌঁছে গেলাম সেখানে।
সেদিন যা ঘটলো তা, আর আগে ঘটে নি কখনও!
কাগজের টুকরোগুলো নেচেনেচে আবৃত্তি শোনাচ্ছিল
ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত্রিতে গিয়ে-
চাঁদকে ঘিরে নক্ষত্রমণ্ডলীরা একত্রিত হয়ে,
একই কবিতামাল্য তৈরি করে আমাকে বলল-
“ওরা অভিমান করেছে,তুমি হাত বাড়িয়ে দাও”
আমি হাত বাড়াতেই দুই বাহুতে টুকরোগুলো সজ্জিত হয়ে লেখা ফুটে উঠল-
তোমাকে অনেক ভালোবাসি জননী, জননেত্রী।
কয়েক টুকরো কাগজ বুকে এসে জমাট বাঁধতেই উপস্থিত সকল জনতা সমস্বরে পাঠ করে উঠল
জয় বাংলা,জয় শেখ হাসিনা।